৳ ২০০ ৳ ১৫০
|
২৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
একাডেমিক বইয়ে প্রতি ১০০০ টাকার অর্ডারে একটি করে খাতা ফ্রি ও ডেলিভারি ফ্রি
আমার একটি বউ এবং দুটি কন্যা আছে। গাড়ি নেই, ফ্ল্যাট নেই, মাথায় নানা ছকের গল্পের প্লট ছাড়া ঢাকা অদূরে, অগভীর জলের নিচে অন্য কোনো স্থাবর প্লট নেই। তবে ৩৫ বছরে দুটি সন্তান, একটি বউ, একটু বেশি হয়ে গেল না? তা হয়তো গেল। আমি বিয়ে করেছি ম্যালা আগে। ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারেই। সহপাঠীকে, অবশ্যই প্রেম-ভালোবাসার কেস। সে অন্য গল্প এবং অনেক পুরোনো গল্প। তবু সেই পুরোনো গল্পই আমাদের বয়ে বেড়াতে হয়, এটাই নিয়ম। আমি আর মিতু দুই কন্যাকে বুকে নিয়ে সেই পুরনো, মরচে পড়া, ঘুণে ধরা, শ্যাওলা পড়া, একটু বিবর্ণ হয়ে যাওয়া গল্প বয়ে বেড়াই। এর নাম সংসার। আমাদের সংসারে কোনো জ্বালাময়ী সমস্যা নেই, আবার খুব উপচে পড়া সুখও নেই। সংসার সম্পর্কে এ রকম একটি সমস্যার কথা একদা শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন— জলে নৌকা থাকুক, সমস্যা নেই, নৌকায় জল থাকলে সমস্যা। তুমি সংসারে থাকো ক্ষতি নেই, কিন্তু তোমার ভেতর যেন সংসার না থাকে। আমরা কেউ শ্রীরামকৃষ্ণ নই। কাজেই সুনাগরিকের মতো আমাদের সংসারের ভেতর যেমন বাস করতে হয়, তেমনি আমাদের ভেতরেও জোরালোভাবে সংসার আছে, সংসার থাকে। মাস গেলে বাড়িভাড়া, আইপিএসের ব্যাটারি নষ্ট হলে, সেটি বদলে ফেলা, বড় মেয়েটা অঙ্কের চেয়ে ইংরেজিতে কেন কম নম্বর পেল, সেটি নিয়ে ভাবা, ছোট মেয়েটার জ্বর হলে তার মুখে থার্মোমিটার পুরে দেওয়া— কত কাজ। সংসারে না থেকে উপায় আছে! অতএব একটা পুরনো গল্পের বাঁধা চরিত্র হয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থেকে আমরা সেই পুরনো এবং ছকবাঁধা গল্পের পাতায় পাতায় ঘুরি, নির্ধারিত সংলাপ আউড়ে যাই, এক সময় শেষ পৃষ্ঠায় এসে গল্পটা আচমকা শেষ হয়ে যায়। তারপর আবার, ইয়েস আবার, সেই গল্পটা প্রথম পাতা থেকে শুরু হয় এবং একই গতিপথে শেষ পাতা অবধি চলতে থাকে।
Title | : | কাগজের নৌকা |
Author | : | আশীফ এন্তাজ রবি |
Publisher | : | আদর্শ |
ISBN | : | 9789849266174 |
Edition | : | 2020 |
Number of Pages | : | 94 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
আমার নাম আশীফ এন্তাজ রবি। জন্ম ২১ আগস্ট ১৯৭৭। তবে অন্য অনেকের মতাে আমারও একটা সার্টিফিকেট জন্মসাল আছে, ২৪.১০.১৯৭৯। নটরডেম কলেজে পড়ার সময় জনৈক বালিকাকে মুগ্ধ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে একটা উপন্যাস লিখে ফেলেছিলাম। একদিন জলসিড়ি নামক উপন্যাসটি সেই বালিকাকে দ্রবীভূত করতে পারেনি। লেখক হিসেবে সেই দিন থেকেই আমি ব্যর্থ। ব্যর্থতাকে সহজভাবে মেনে নিয়ে আমি অন্য কাজকর্মে মনােনিবেশ করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর হুট করে বিয়ে করে ফেলি। সংসার চালানাের জন্য টিউশনির চেষ্টা করি। একটা টিউশনি জুটেও যায়। ছাত্র ইন্টারমিডিয়েটে বিজ্ঞানবিভাগে পড়ে। প্রথম দিন তাকে নিউটনের গতিসূত্র বােঝাই। মাস্টার হিসেবে আমি কেমন এটা, পরখ করার জন্য ছাত্রের বাবা পাশে বসে ছিলেন। ছাত্রটি নিউটনের গতিসূত্র চমৎকারভাবে ধরে ফেললেও তার ক্লাস এইট পাশ বাবা ব্যাপারটার আগামাথা কিছুই বুঝলেন না। কাজেই প্রথমদিনেই টিউশনি থেকে বাদ পড়ে গেলাম। এরপর শুরু করলাম পত্রিকায় লেখালেখি। শুধু টাকার জন্য প্রথম আলাে পত্রিকায় দুই হাতে লেখা শুরু করলাম। সেই লেখালেখির জেরেই যুগান্তর পত্রিকায় চাকরি পেয়ে যাই । টানা ১৩ বছর সেখানে সাংবাদিকতা করি। যুগান্তরে থাকার সময় জনৈক প্রকাশক আমার সাথে যােগাযােগ করেন। তিনি আমার একটি বই বের করতে চান। পুরনাে ব্যর্থতার কথা ভুলে আমি বই বের করতে রাজি হয়ে যাই। চার মাস ঘুরানাের পর চারটি ছােট গল্প তার হাতে তুলে দেই। প্রকাশক বিরস বদনে বলেন, এইটুকু দিয়ে তাে দুই ফর্মাও হবে না। প্রকাশককে উদ্ধার করার জন্য আমি আরও দুইজন তরুণ লেখককে জোগাড় করি, যারা লম্বা লম্বা গল্প লিখতে পারেন। তিনজনের বারােটি গল্প মিলে বের হয়, তিন তরুণের গল্প। এরপরের বছর একই কায়দায় ত্রয়ী নামে আরেকটি গল্পগ্রন্থ। বের হয়। আশ্চর্যজনকভাবে প্রথম বই তিন কপি, দ্বিতীয় বইটিও। সর্বমােট তিন কপি বিক্রি হয়। লেখক তিনজন থাকায় এই দারুন সাফল্য। তিনে মিলে করি কাজ, হারিজিতি নাহি লাজ।এরপর টানা আট বছর আমি কোনাে বই ফাঁদার কথা স্বপ্নেও। ভাবিনি। তবু স্বভাবদোষে বের হলাে, কাগজের নৌকা। এখন নৌকাডুবির অপেক্ষা। লেখক পরিচিতিতে ভালাে ভালাে কথা লেখার নিয়ম। অধিকাংশক্ষেত্রে লেখক নিজেই নিজের ঢােল ফাটিয়ে ফেলেন। আমার কোনাে ঢােল নেই, তাই ফাটাতে পারলাম না। আমি দুঃখিত।
If you found any incorrect information please report us